টুকটুক করে বছর শেষ হতে চলল । শীত বাবাজীবন গেছো দাদার মতো এই আছি, এই নেই করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কেউ খবর পড়ছেন, কেউ খবর হচ্ছেন, বাকিরা ভালো আছেন। গুজরাত নির্বাচন, বিরাট বিবাহ, জঙ্গিহানা, শিল্পচর্চা, শিশুকন্যা ধর্ষণ, ম্যানহাটনে বিস্ফোরণ, নতুন ফোনের আমদানি, নেতাদের বকবকানি, মহাকর্ষ তরঙ্গের খোঁজ, বিক্ষোভ, মারামারি, এসব, স—অ—ব, হয়ে চলেছে একসাথে, বীভৎস দ্রুততায়। আর এই নীল গ্রহটা অধিবাসীদের সমস্ত পেঁয়াজি সহ্য করে বাঁই বাঁই করে পাক খেয়ে চলেছে ২০১৭ থেকে ২০১৮-এ।
নতুন বছর আসছে। কদিন বাদেই শুরু হবে দিন গোনা। “কেমন কাটল ২০১৭?”, “কেমন হবে ২০১৮?” এইসব বৃহৎ বৃহৎ প্রশ্ন নিয়ে শিরোনাম লেখা হবে। সবকিছু যেমন চলছিল চলবে। মঙ্গলযান নতুন ছবি পাঠাবে, LHC-তে দৌড়বে ঝাঁক ঝাঁক তেজী কণা, নতুন ভাবনা নিয়ে লেখা হবে গান, কবিতা, গপ্পো। নতুন নাটক, সিনেমা হবে, এদিকে ওদিকে। আঁকা হবে নতুন ছবি। অনেক লোক মরবে। অনেকে জন্মাবে। অনেকে মার খাবে, অনেকে মারবে। কেউ ব্যর্থ, হতাশ হয়ে থাকবে, কেউ হবে সাফল্যে উজ্জ্বল। ফুটপাতে বসা পাগলটা একইরকম ভাবে ঘাড় বেঁকিয়ে, সমুদ্র দেখার মতো চোখে তেষ্টা নিয়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকবে। চাষিরা মাঠে যাবে রোজ, শ্রমিকেরা তাদের কাজে। দিন যাবে, আসবে, যাবে... যেমন যায়। পৃথিবীর কোন এক প্রান্তে, কোন এক শিশু, প্রথমবার, ভেজানো ছোলা থেকে কল বেরুতে দেখে ভীষণ অবাক হয়ে যাবে, আর অপটু হাতে খুরপি চালিয়ে, সারাগায়ে মাটি মেখে, প্রথম গাছ পুঁতে উঠে রোদ্দুরের মধ্যে দাঁড়িয়ে একগাল হাসবে।
এই পর্যন্ত লিখে আকাশ পাতাল শুধু ভাবছি আর ভাবছি, হঠাৎ একটা খ্যাঁকখ্যাঁক করে হাসির আওয়াজ। মিহি গলায় পাশ থেকে কে যেন বলে উঠল, “ওরম মনে হয়।”
আপাতত এখানেই দাঁড়ি। “শীতকাল এসে গেছে সুপর্ণা”, সুতরাং রোদ পোহান, পিঠেপুলি খান, আর দেদার বই পড়ুন। আমরা, পরবাসিয়ার দল, আপনাদের আশীর্বাদ আর ভালবাসা নিয়ে হাজির হয়েছি আবার। আপনাদেরই দানে ঋদ্ধ হয়েছে এই পাঁচালি, ঋদ্ধ হয়েছি আমরাও । পত্রিকা ভালো লাগলে জানান, খারাপ লাগলেও।
ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।