সম্পাদকের কথা

প্রিয় পাঠকবন্ধুরা,

হই-হই করতে করতে কীভাবে যেন পুজোর ক'টা দিন মুঠোয় ধরা বালির মতো গড়িয়ে গেল, বোঝাই গেল না। ঠিক যেন একটা মায়াবী স্বপ্ন! মা ফিরে গেলেন স্বধামে। কিন্তু বাঙালির উৎসব কি তাতে ফুরোয়? বিসর্জনের করুণ সুর কাটতে না কাটতেই লক্ষ্মীপুজো পেরিয়ে বাঙালি এখন দিন গুনছে আলোর রোশনাইয়ে গা ভাসাবার--- সামনেই যে দীপাবলি, কালীপুজো। চারপাশের ক্রমশ ঘনিয়ে ওঠা অন্ধকারের মধ্যেও একদিনের আলো খুঁজে নেবার উৎসব। বাঙালির জীবনে বারো মাসে তেরো পার্বণের আমেজ যেমন ফুরোয় না তেমনই কখনও থামে না তার পাঠ আর মননের গতিধারাও--- সত্যিকারের আলোর সন্ধান। আর তাই এই উৎসবমুখর সময়ে আমরাও এসে গেছি উৎসব সংখ্যার রঙিন ডালি সাজিয়ে। বিভিন্ন স্বাদের গল্প, উপন্যাস আর অনুবাদ সাহিত্যে জমজমাট এবারের সংখ্যা। আর শুধু তাই নয়, সেই সঙ্গে পাল্টে গেছে পরবাসিয়া পাঁচালীর ওয়েবসাইটের পুরোনো চেহারাটিও--- সম্পূর্ণ নতুন ও ঝকঝকে; নান্দনিকতার সঙ্গে প্রতিমুহূর্তে ছুটতে থাকা এই আধুনিক জীবনের এক মেলবন্ধনের চেষ্টা।

এবার আসি ভেতরের কথায়। পাঠকবন্ধুরা, যাঁরা নিয়মিত আমাদের ওয়েবজিনটির পড়েন, নিশ্চয়ই জানেন যে পরবাসিয়া পাঁচালী মূলত বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন জনরা ফিকশনগুলো নিয়েই কাজ করে থাকে। কখনও অপরাধ-রহস্য, কখনও কল্পবিজ্ঞান-ফ্যান্টাসি আবার কখনও বা আতঙ্ক কিংবা হরর বিষয়ের সাব-জনরা হিসেবে লাভক্রাফটিয়ান ও সাইকোলজিক্যাল হরর--- আমরা সবসময় চেষ্টা করে গেছি পাঠকের দরবারে নতুন কিছু হাজির করবার। আর প্রতিটি সংখ্যাতেই আমরা বিপুল সাড়াও পেয়েছি আপনাদের কাছ থেকে--- সাহস পেয়েছি আরও এগিয়ে যাবার। তাই এবারের উৎসব সংখ্যাকে সাজানো হয়েছে সবধরণের জনরা ফিকশন দিয়ে--- এই সংখ্যায় যেমন রয়েছে সাবেকি গোয়েন্দা কিংবা ভৌতিক কাহিনি তেমনই আছে সাইকো কিলার, তন্ত্র, কল্পবিজ্ঞান এবং হাস্যরসের গল্পও। আবার কোথাও বা সুদক্ষ লেখকদের কলমের জাদুতে দুটো সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী জনরা মিলেমিশে তৈরি করেছে এক নতুন আস্বাদ। উৎসব সংখ্যায় আমাদের নিয়মিত লেখকরা যেমন রয়েছেন, তেমনই এবারই প্রথমবার পরবাসিয়া পাঁচালীতে কলম ধরেছেন বহু প্রথিতযশা সাহিত্যিকও। বর্তমান সময়ের বহু প্রতিভাবান অলঙ্করণ শিল্পীকে পাশে পেয়েছি আমরা, যাঁদের রঙের ছোঁয়া ছাড়া কখনই এই সংখ্যাটিকে এভাবে সাজিয়ে তোলা সম্ভব হত না। আর সেই সঙ্গে অবশ্যই শিল্পী সুমিত রায়ের আঁকা অনবদ্য প্রচ্ছদ, যার মধ্য দিয়ে খুব নিখুঁতভাবেই ফুটে উঠেছে উৎসব সংখ্যার মূল ভাবনাটি। আমরা আন্তরিকভাবে তাঁদের সবার কাছে কৃতজ্ঞ।

এই তো গেল আমাদের কথা। এবার আপনাদের পালা। বন্ধুরা, আপনাদের মতামত ছাড়া কোনওদিনই আমাদের পক্ষে এতদূর আসা সম্ভব হত না। পাঠকের ভালো-লাগা, মন্দ-লাগাই আমাদের আত্মবিশ্লেষণের একমাত্র মানদণ্ড। তাই আর সময় নষ্ট না করে চলুন ঢুকে পড়ি উৎসব সংখ্যার অন্দরমহলে; জ্বলে উঠুক উৎসবের আলো। এবং অতি অবশ্যই আমাদের জানান যে কেমন লাগল সংখ্যাটি--- কমেন্টে, মেইলে কিংবা আমাদের ফেসবুক পেজে মেসেজ করে। আমরা অপেক্ষায় থাকব।

আসন্ন প্রতিটি দিনের জন্যে অনেক শুভেচ্ছাসহ,