ম্যাডামের সাথে সেদিন - পারমিতা বণিক

অলংকরণ - কর্ণিকা বিশ্বাস

“ফরিদ কাকুর কথাটা সেদিন কেমন যেন ভাবিয়ে তুলেছিল।” মোবাইলটা ব্যাগে ঢোকাতে ঢোকাতে ম্যাডাম আমায় বললেন।

প্রফেসর হলেও আমাদের সব্বাইকার সাথে খুব মজা করেই কাটান। এমনটা ম্যাডাম আমার কানে শোনা নয়, আমার নিজের চোখে দেখা। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা।

ম্যাডাম বললেন, “বিভিন্ন কারণে সেদিন আর উনাকে কিছু জিজ্ঞেস করতে পারলাম না। চা-টা খেয়ে থুড়ি পান করে কাঠের বেঞ্চিতে চুপটি করে কিছুক্ষণ বসেই রইলাম। আগাগোড়া কিছুই যেন ঠাহর করতে পারছি না। যাগগে যাক। রোজ-ই তো আসি। কাল না হয় জেনে নেব। উঠে সবুজ বালতিতে মাটির ভাঁড়টা ফেলে রাস্তা নাপলাম।

পরের দিন কলেজের লাঞ্চ-ব্রেকে যখন আবার গেলাম কাকুর ওখানে, তখন জিজ্ঞেস করলাম কাকুকে। কাকু, কাল যে তুমি বলছিলে... কেন এমন বললে? কী হয়েছিল?

ঠাকুরমার ঝুলি থেকে যেমন একটা একটা করে মজাদার গল্প বেরোয় রোজ, কাকুর অভিজ্ঞতার থলে থেকেও সেদিন একটা গল্প বেরোল। বানানো নয়, কাকুর একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। কাকু বলতে লাগলেন, 'আজ থেকে প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর আগের কথা। মিত্তিলদের বাড়িতে হঠাৎ কোথা থেকে যেন একজন লোক থাকতে এলেন। বেশ-ভূষাতে ভদ্দরলোক তা বুঝতে কারোর দেরী হয়নি। নিজেই লোক জোগাড় করে ঘর-দরজা সব পরিষ্কার করালেন। উনার আবার একখানি জব্বর অভ্যেস ছিল। সারাদিনে আর যা-ই করুন না কেন, সাঁঝেরবাতি তুলসীমঞ্চে রোজ জ্বালাতেন। যাই হোক, আমার এখানে চা খেতে আসতেন। সেই সূত্রেই উনার সাথে আমার আলাপ। কিছুদিন যাবার পর বুঝতে পারলাম লোকসঙ্গ খুব ভালবাসেন। আর খুব ভাল কথা বলতেন। কথা তো আমরা সব্বাই বলি। তার মাঝেও কেউ কেউ মন কেড়ে কথা বলার কায়দায় মাহির হন। উনি তার মধ্যেই একজন। তা একদিন জিজ্ঞেস করেই ফেললাম। ‘দাদা, মিত্তিলদের এই পরিত্যক্ত বাড়িতে হুট করে আপনি কেন থাকতে এলেন? ইয়ে মানে চারপাশে মানুষ যা বলে ওই বাড়িটা নাকি দূষিত। আর তার উপর আপনি থাকেন একা। আপনার ভয় করে না?’

এক চিলতে হাসির রেখা নেচে উঠল উনার চেহারায়। ‘আরে ওসব ভয়-টয় করে না। আর ভয় করলে রিসার্চটা করব কী করে বলুন!’

‘রিসার্চ মানে? ওটা কী ?’

‘মানে গবেষণা। খোঁজও বলতে পারেন।‘

‘কীসের আবার খোঁজ? আপনাকে তো কোনদিন কিছু খুঁজতে দেখিনি। ওই পরিত্যক্ত বাড়িতে কী খোঁজেন আপনি দাদা?’

‘ভাষার খোঁজ।’

আমার মাথাটা উনার কথা শুনে কেমন যেন ভনভন করছিল। বললাম, ‘ধুর মশাই। খুলে বলুন তো, কোন তালে এসেছেন আপনি এখানে।’…”

এদিকে বিষয়টা জানতে আমিও খুব আগ্রহী ছিলাম। আর ম্যাডামের বলার ভঙিমায় আগ্রহ যেন গতি পেল। ম্যাডাম কন্টিনিউ করলেন।

“তারপর কাকু বলতে লাগলেন, সেই লোকটি বলল, ‘তাহলে শুনুন। আমার নাম সৌম্যদ্যুতি। আমি ইদানীং একটি বিষয়ের উপর গবেষণা করছি। বিগত পঞ্চাশ বছরের গানের ভাষা। আমার কাঁধে হাত চাপিয়ে উনি বলতে লাগলেন- আসলে কী জানেন তো, যে কোনও রচনার সাথে ইন্টাগ্র‍্যালি জড়িয়ে থাকে তৎকালীন সময়।

প্রতিটি বছর জানেন ভাষাকে অনেক বদলে দেয়। আবার এমন অনেক রচনা থাকে যেখানে আভিজাত্যের কোন দরকারই হয় না। সেইসব নিয়েই একটু নাড়াচাড়া করি আরকি।’

উনার পাশে বসতে একটু ইতস্তত বোধ হচ্ছিল। মানুষটার ব্যক্তিত্বটাই এমন যে নিজের খামতিগুলো কোথায় যেন মিলিয়ে যায়। একটু সুর উঁচিয়ে বললাম, ‘বেশ বুঝলাম। কিন্ত স্যার এই চত্বরে গান গাইতে তো আমি বাপের জন্মে কাউকে শুনিনি। আর ওই খালি বাড়িতে গান! ইয়ে মানে আমার সব কেমন যেন গুলিয়ে যাচ্ছে।’ উনি আমার পিঠে আলতো করে একটা থাপড় মেরে বললেন, ‘দাদা বললে আমি বেশী খুশী হব। আসলে কোন এক সূত্রে জানতে পারি এই বাড়িতে নাকি একটা গান শোনা যায়। কিন্তু আসলে আমি যখন থেকে এসেছি কোনওদিন কোন গান শুনতে পাইনি।’

‘বলেন কী ! খালি বাড়িতে কে গান গাইবে! আরে মশাই আপনি তো পাগল করার কথা বলছেন। আর গান গাইলে সেকি কোন মানু্ষের কম্ম ভেবেছেন! ওই বাড়ি পাশ কাটিয়ে কেউ সহজে যায় না, আর কেউ ওখানে গিয়ে গান গাইবে! খেয়ে-দেয়ে আর কাজ নেই।’

‘দেখি না কয়েকটা দিন। কিছু যদি না পাই, ফিরে যাব।’

‘আপনার বাপু সাহসের ধন্য।’

সেই রাতে প্রচণ্ড ঝড় শুরু হল। ঘরে বসে মনে মনে ভাবছিলাম ওই যে আকাশের মেঘ-গর্জন, ওইটাকে গান ভেবে যা খুশী নিয়ে বাপু করেন না গবেষণা। তবুও এই পরিত্যক্ত বাড়িতে এঁটে বসার কী দরকার। এসব ভাবতে ভাবতে একটা সময় ঘুমিয়ে পড়লাম। হঠাৎ দরজার কড়াটা কে যেন খুব সজোরে নাড়াতে লাগল। দৌড়ে গিয়ে দরজাটা খোলার সময়টুকু যেন দিতে রাজী নন দরজার ওপারের মানুষটি। খুলে দেখি এই গবেষক। সারা গা চুপচুপে ভেজা।

‘এ কী! আপনি এই ঝড়-ঝঞ্ঝার রাতে এভাবে একা এখানে! কী হয়েছে?’…”

আমি মাঝখান থেকে বলে উঠলাম, “তারপর ম্যাডাম? তারপর উনি কী বললেন?”

ম্যাডাম বললেন,“শোনো না। তারপর কাকু বলতে লাগলেন, দাদা খুব ব্যস্ত হয়ে বললেন, ‘ভাই...আমার একখানা টর্চ আর একটা কোদাল চাই। দিতে পারবে?’ বললাম, ‘পারব। কিন্তু কেন? এসব দিয়ে এখন কী হবে?’

তিনি বললেন, ‘ভাই ওসব কথা পরে হবে। এখন দাও তাড়াতাড়ি।’

টর্চ আর কোদাল নিয়ে উনি রওনা দিলেন। দাদা বলে ডাকি। একা যাচ্ছেন। খুব চিন্তা হচ্ছে। আমিও উনার পিছু ছুটলাম। বাড়ির ইয়া বড় গেটটা খোলা ছিল। বাড়িতে ঢুকেই উনি সোজা চলে যান বাড়ির পেছন দিকের বাগানে। বাগান সে ছিল কোন এক কালে। এখন গভীর জঙ্গল। সেখানে গিয়ে প্রকাণ্ড অশ্বত্থ গাছের তলায় কোদাল দিয়ে খুঁড়তে থাকেন। আমি কিছু বুঝে উঠতে না পেরে টর্চ মেরে দাঁড়িয়ে থাকি। ভয়ে আমার হাত-পা এদিকে কাঁপছে। উনি কী করছেন, কেন করছেন ইত্যাদি নানা সওয়াল আমার মনে প্যাঁচ খাচ্ছে। খুঁড়তে খুঁড়তে একটা সময় আমার চক্ষু ছানাবড়া।

‘এ কী! এটা কীসের বাক্স?’…”

ম্যাডাম বলতেই থাকলেন, “কথাগুলো বলতে বলতে ফরিদ কাকুর গলার আওয়াজ কেমন যেন ভারী হয়ে এল। আমি অনেকটা হতবাক। কাকু সুরটা একটু উঁচিয়ে বললেন, বাক্সের মুখ খোলার সাথে সাথে আমার হাতে-পায়ে কেমন যেন একটা অসারতা ছাপিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু করার কিচ্ছুটি নাই। এর আগে শুনে থাকলেও কংকাল দেখিনি। সেই প্রথম দেখা। মাথার খুলি, হাত-পায়ের সব হাড়, বুকের পাঁজর আরো অনেক। সাথে সাথে নাকে চাপা দিলাম। কেমনতর একটা গন্ধ! আগে কখনো পাইনি এমন গন্ধ। এদিকে আকাশ জুড়ে মেঘের গর্জন যেন সমানতালে বেড়েই যাচ্ছে। থামার নামটুকুও নাই। তার সাথে ঢালা বৃষ্টি। ঝড়ের সাথে মিলে একটা ভয়ানক পরিবেশ বয়ে এনেছে। দাদা ওখানে চুপ করে বসে রইলেন কিছুক্ষণ। তারপর বাক্সের মুখটা বন্ধ করে দিয়ে গিয়ে বারান্দায় বসলেন। আমি কী করবো কিছু ভেবে পাচ্ছিলাম না। দাদা আমার দিকে মুখ তুলে বললেন, ‘তুমি বাড়ি যাও ভাই। অনেক রাত হয়েছে।’

আমি বললাম, ‘পাগল নাকি! আমি আপনাকে এভাবে একা ছেড়ে কোথাও যাচ্ছি না।’ দাদা আর কিছু বললেন না। উনি কি চাইতেন আমি উনার সাথে সেখানে থাকে যাই নাকি উনি একটিও বাড়তি কথা বলতে চাইলেন না সেসব নিয়ে আমি আর ভাবলাম না। সারা রাত কারোর আর খুব স্বাভাবিকভাবেই ঘুম হয়নি। পরের দিন সকালে উঠে দাদাকে বললাম, ‘দাদা, আপনি শিগগির এখান থেকে ফিরে যান। আমি জানি না আপনি কোত্থেকে এসেছেন। জানতে আর চাইও না। ব্যস আপনি ফিরে যান।’ উনি কোনও কথা না বলে গুম মেরে রইলেন। কাকু আমাকে বলতে লাগলেন, আচ্ছা ম্যাডাম বলুন না, প্রাণ বাঁচলে তবে না সব কিত্তি। সাহস বাঁধিয়ে সেদিন বলেই ফেললাম, ‘গবেষণা না কী আলু- কচু করবেন তা নিজের জায়গায় গিয়ে করুন। এখানে এভাবে আঠা হয়ে থাকলে নিজে তো মরবেনই, সাথে আমিও অক্কা পাবো।’ রাতজুড়ে চুপ থাকার পর উনি শুধু একটা কথাই বললেন, ‘তুমি আর আমি ছাড়া এ ব্যাপারে কেউ যাতে কিছু না জানে।’ অনেক জোড় করার পরেও উনি আমার সাথে আমার বাড়ি গেলেন না। ওখানেই পড়ে রইলেন। কবরের পাশের ঘরে উনি আছেন, ভেবে ভেবে আমি প্রায় পাগলপাড়া।

রোজকার মতো সেদিনও যথাসময়ে এলেন চায়ের জন্য। আমি চা বানিয়ে দিলাম। কিন্তু উনি কি আর এই দুনিয়ায় আছেন! মনে মনে ভাবলাম, এই গবেষণা উনাকে পাগল করে ছাড়বে। জিগ্যেস করলাম, ‘আচ্ছা দাদা, আপনি এখনো কীসের জন্য এখানে পড়ে আছেন। বলুনতো!’

‘আমাকে যে কাজটা করতেই হবে ভাই,’ উনি বললেন।

ইস কী জ্বালা! বারম্বার কেবল এক কথা। এবারে মনে মনে ঠিক করলাম মরুক-গে। আমি বাপু আর বেশী কিছু বলতে যাব না।

দেখতে দেখতে পুজো এগিয়ে এলো। একটু একটু শীত পড়েছে। শহরের মানুষদের মতো শীত না পড়ার অভিযোগটা অবশ্য আমাদের করতে হত না। আশ্বিনমাসের গোড়ার দিকেই পালটে যেত আমাদের ছোট্ট বাংলা দোয়াভূমির চেহারা। এখন অবশ্য একটু-আধটু অভিযোগ করে থাকি। যাই হোক, বেশ ধুমধাম করেই পুজো কাটালেন আমাদের সাথে। আমরা সব্বাই মিলেই শিব-শক্তির আরাধনা করি। ওই ব্যাপারে আর টুঁ শব্দটুকুও করেন না।

একদিন যখন চা খেতে এলেন এখানে, বেশ সুন্দর একটি কাল রঙের ব্যাগ ছিল উনার হাতে। কাঁধে ঝুলিয়ে এসে বসলেন। সেদিন আর কাঠের বেঞ্চিতে বসলেন না। কেন জানি না চেয়ারে বসলেন। হয়তো উনার সামনে টেবিলের উপর ব্যাগটা রাখবেন বলে। চা-টা খেয়ে উনি চলে গেছেন বেশ অনেকক্ষণ পরে আমার নজর পড়ে টেবিলের উপর রাখা একটি ডাইরির দিকে। বেশ বুঝলাম উনারই হবে। এগিয়ে গিয়ে ডাইরিটা হাতে নিতেই কেমন যেন একটা শিউরে উঠল সারা গা। খুলে দেখলাম পাতাগুলো কেমন যেন একটু বাদামী বাদামী। লেখা অনেকগুলো গান। ভাবলাম দোকান বন্ধ করে গিয়ে উনাকে দিয়ে আসব।

যেমন ভাবা তেমনি কাজ। দুপুরে দোকান লাগিয়ে যাই উনার বাড়িতে। গিয়ে দেখি উনি ঘরে নেই। অনেক ডাকাডাকির পরেও কোন সাড়া-শব্দ পেলাম না। ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ভাবলাম উনি আবার একা কবরের দিকে যাননি তো! কই না তো! ওদিকটায় উনি ছিলেন না। জামা-কাপড় কিছুই নেই ঘরে। তবে কি উনি চলে গেলেন! কিন্তু না বলে যাবার মানুষতো উনি নন। এতগুলো মাস একটা মানুষের সাথে কথা বলেছি, একটু হলেও আন্দাজ করা যায়। কিছু বুঝে উঠতে পারার আগেই নজর পড়লো টেবিলের উপরে রাখা একটা সাদা কাগজের টুকরোর দিকে। তাতে লেখা, ‘বড় দাদা হিসেবে ছোট ভাইয়ের কাছে একটি চাওয়া। ডাইরিটা কবরের বাক্সের ভিতর রেখে দিও। আর মনে রেখো আশে-পাশের কেউ যাতে কিচ্ছুটি টের না পায়। আমি চাই না এখানে কোনও ধরনের আজব ভীতি ছড়াক।’…”

আমি ভুরু কুচকে ম্যাডামের দিকে তাকিয়ে বললাম, “ম্যাডাম! আমার এবার ভয় করছে।” ম্যাডাম বললেন, “ধুর বোকা। আগে শোন-তো। তারপর কাকু বলতে লাগলেন, আমার কপাল বেয়ে অঝোরে ঘাম ঝরছে। আমি আগা-গোড়া কিচ্ছু বুঝে উঠতে পারিনি। কিন্তু উনার কথা রাখলাম। কিন্তু তারপর ওই গ্রামে আর থাকিনি। চলে আসি এখানে। এই কলেজের পাশে দোকান সাজিয়ে বসি। উনি আদৌ কীসের জন্য ওই গ্রামে গেলেন,আমার সাথে এতো ভাব কেন হল উনার, আমায় কেন এমন একটি কাজের দায়িত্ব দিলেন, আর তারপর হঠাৎ এভাবে উনি কোথায় চলে গেলেন ইত্যাদি নানা প্রশ্ন আজও আমায় ভাবায়। উনি মানুষটিই আমার কাছে একটি রহস্য।’…”

বলতে বলতে ম্যাডামের চোখ-মুখ কেমন লাল হয়ে এল। সারা কপাল জুড়ে উনার ঘাম। আমি জলের গ্লাসটা ম্যাডামের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললাম, “একটু জল খান ম্যাডাম”। গ্লাসের পুরো জলটা ঢকঢক করে খেলেন ম্যাডাম। তারপর ব্যাগ থেকে রুমাল বার করে মুখটা মুছলেন। কেমন একটা অদ্ভুত নিস্তব্ধতা ছেয়ে গেল।

কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর ম্যাডাম বললেন, “জানো পারমিতা, আমি যে গ্রামে বড় হয়েছি, তার নাম দোয়াভূমি। আমার বড় দাদা সৌম্যদ্যুতি মিত্তিল। বড্ড গান ভালবাসতো। বলতো আমি বড় হয়ে গান নিয়ে গবেষণা করব। আর অত্যন্ত ভিন্ন ছিল তার প্ল্যান। সে বলতো আমি গানের ভাষা নিয়ে কাজ করবো। সময় কী করে গানের ভাষাকে নতুন রঙে রাঙিয়ে তুলে এটা ওকে বড্ড ভাবাতো। একটা ডাইরিতে বেছে বেছে গান সব নোট করে রাখতো। আর ডাইরিটা সব সময় নিজের কাছে রাখতো। দাদা তখন কলেজে। আমি ক্লাস ইলেভেন। একটি দুর্ঘটনায় দাদা প্রাণ হারায়। বাবার ইচ্ছে অনুযায়ী বাড়ির পেছনের বাগানে দাদাকে কবর দেওয়া হয়। তারপর আমরা ওই বাড়ি ছেড়ে চলে আসি। দাদার ডাইরিটার কথা আমাদের কারোর মনে ছিল না।”