মামুলি একটা গল্প - ধূপছায়া মজুমদার

অলংকরণ : সুমিত রায়
গল্পের আগে

মনে করুন এক মাঝারি শহরের এক মেঘলা সকাল। আকাশের মুখে সেই ভৌতবিজ্ঞান বইয়ের ফুঁ দিয়ে ঘোলা করা চুনজলের মতো একটা রং লেপে দিয়েছে কে যেন। আকাশের রং এরকম থাকলে সবচেয়ে ভালো হয় আধখানা চোখ খুলে অ্যালার্ম বন্ধ করে ফের চোখ বুজে ফেললে। চাই কি অ্যালার্মের ফাণ্ডার আবিষ্কারকের ফ্যামিলির শ্রাদ্ধও সেরে নিতে পারেন মনে মনে। কিন্তু, পেট বড় বালাই, আর কোনও আপিসেই মেঘলা দিনে কামাই করলে মুখ দেখে মাইনে দেবে না। কাজেই ঢিলে মনে গিঁট দিয়ে, যাবতীয় বৈপ্লবিক চিন্তার বাণ্ডিলকে চিলেকোঠায় তুলে রেখে রওনা দিতেই হয় আপিসের জাঁতাকলের পানে। ঠিক আমাদের এই গল্পের প্রদীপ সরখেলের মতো। ছেলেটার বয়েস বেশি নয়, মাথার সামনের দিকটা ফাঁকামতো হলেও দেখতে শুনতে মন্দ নয়, কিন্তু রোজকার এই ঘড়ি মেপে পা ফেলার চাপে কেমন যেন দরকচা মেরে গেছে, দেখলে মনে হয় সংসারের জোয়ালখানা বুঝি ওরই কাঁধে।

সে যাইহোক, আপাতত প্রদীপ মেস থেকে বেরিয়ে বাসস্টপে গিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এবার চলুন, আমরাও ওর পাশে গিয়ে দাঁড়াই, গল্পের খোঁজ করি।

প্রদীপের কথা

আজ কি কোনও ছুটির দিন? পনেরো মিনিট হয়ে গেল হাঁ করে দাঁড়িয়ে আছি, একটা অটোরও দেখা নেই। গেল কোথায় মালগুলো? ওদিকে ঘড়ির কাঁটা সাড়ে ন’টার এক চুল ওপাশে গেলেই দেড়েল চৌধুরী চশমাটাকে নাকের ওপরে ঠেলে তুলে ঘড়ির দিকে তাকাবে। ঠোঁটে আবার বুলিও ফোটাবে শালা, “ওয়েল ডান ইয়ংম্যান, জাস্ট ফাইভ মিনিটস লেট!” টাইমের জ্ঞান যেন বুড়োর একারই আছে! আর এমন অমায়িক গলা, কেবিনের বাইরের সিটে তিস্তার কানে যাবেই কথাগুলো। ওজ্জন্যই মেয়েটা আমায় দেখলেই মুখ টিপে হেসে ফেলে। নিশ্চয়ই ভাবে কনস্টিপেশনের প্রব্লেম! নইলে আর রোজ রোজ লেট হয়!

কনস্টিপেশনের প্রব্লেম আমাদের বংশে আছে বটে, বাপ ঠাকুর্দা লাইফের মেজর টাইম কলঘরেই কাটিয়ে ফেলেছেন, তবে রোগটা আমায় পেড়ে ফেলতে পারেনি, টাকপ্রবণতার পাশাপাশি পেট খোলসা করার স্বভাবটাও বোধহয় মামারবাড়ির জিন থেকেই পেয়েছি। তবে ইদানীং বাবার কনস্টিপেশন রোজ রাতে হেব্বি জ্বালাচ্ছে আমায়। খেটেখুটে ফিরে মাসির রেঁধে দেওয়া রুটি আর ঘ্যাঁট বেড়ে বসব কি মায়ের ফোন চলে আসবে। তাতে ফিফটি পার্সেন্ট থাকে বাবার কনস্টিপেশন আর তার চাট্টি তুতো রোগের গল্প, আর বাকিটায় থাকে গেঁটে বাত, বাথরুমের শ্যাওলা, কাজের লোকের কামাই আর সিরিয়াল। ওরই মধ্যে মাসে একটা করে মেয়ে দেখে আসবে বাবা মা আর তার বায়োডাটা উগরোবে কানের কাছে, যেন আমার বিয়ে দিলেই সংসারে মা অন্নপূর্ণা এসে সেঁধোবে। আরে বাবা, বিয়ে করলে কি আমি বউকে বাপমায়ের পা টেপাতে বাড়িতে রেখে আসব? এই সোজা সত্যিটা এরা বোঝে না। আমি যেমন বুঝি না বরের পকেটে মাস গেলে বারোহাজার ঢুকলে খুশি হওয়ার মতো মেয়ে আজকাল পাওয়া যায় কিনা। সব তো দেখি টপ টু বটম পালিশ মেরে বরের বাইকে চেপে উড়ে বেড়ায়। আমার কপালেও এমন জুটলে সন্ন্যাসী হয়ে যাবো।

ওই আসছেন এক মহারাজ! শালা অটো তো নয়, অর্জুনের রথ, চালাচ্ছেন কলির কেষ্ট!

“সেণ্ট্রাল পার্ক?”

“খুচরো দেবেন।”

“তোমরা মাইরি পারোও ভাই!”

যাক, ফোর্থ হয়ে বসতে হলো না। পাঁচ দশের হাইট নিয়ে বেঁকেচুরে বসতে হেবি হ্যাঙ্গাম হয়, দামড়া পা-গুলোকে খুলে ঘাড়ে নিতে মন চায়।

“দিদি, প্যাকেটটা একটু...”

“কোথায় রাখব বলুন? দেখছেন তো এদিকে অবস্থা!”

“দিন, আমি ধরছি। আপনি একটু চাপুন ওপাশে।”

“নো নো ইটস ওকে। আই’ল ম্যানেজ।”

হ্যাত্তেরি, প্যাকেটগুলো ধরতেও দেবে না, নিজেও সরবে না। আজব পাবলিক! ন্যাও, এ আবার লোক তুলছে!

“জলদি চ ভাই, লেট হচ্ছে।”

“এই যে দাদা, একটা প্যাসেঞ্জার তুলেই...”

লেহ্, বাচ্চাকাচ্চা আছে দেখছি! শিওর, উঠেই বলবে বাচ্চা ধরতে। অন্যের বাচ্চাকে কোলেটোলে বসাতে আজকাল বড্ড অস্বস্তি হয়। যা দিনকাল, কে কী বুঝবে ভগাদা জানে, লোকের ভালো করতে গিয়ে পাবলিকের ক্যালানি খেয়ে মরবো শেষটায়!

সুনেত্রার কথা

“বাবলি, হাত ছাড়াচ্ছো কেন? ব্যাগ ছাতা বটল নিয়ে পাগল পাগল লাগছে, তুমি আর অসভ্যতা কোরো না।”

“মা, ওই বেলুন, রেড বেলুনটা দাও না মা!”

“একদম না। এতেই এই, এর ওপর বেলুন জুটলে আমি রাস্তায় পড়ে যাবো, তুই একা একা বাড়ি যাবি। যাবি?”

“না। দাও না বেলুন, অনলি ওয়ান!”

“দাঁড়াও, চুপ করে দাঁড়াও এখানে, প্যাকেটটা ব্যাগে ঢোকাই।”

এই বর্ষার তিনটে মাস অসহ্য লাগে। যেখানে যাও ছাতা আর রেনকোট বগলে চেপে নিয়ে চলো। রোজকার এই হ্যাপা আর পোষায় না বাবা! ধুত, নেক্সট মাস থেকে ভ্যানে দিয়ে দেবো বাবলিকে।

“বাবলি!” একে নিয়ে আর পারি না। কোনদিন রাস্তায় মাথা ঘুরে পড়ে থাকব এর জ্বালায়।

“এখানে এলে কেন দৌড়ে? বললাম না চুপ করে আমার কাছে দাঁড়াতে? বাবাকে সব বলছি গিয়ে, দাঁড়াও।”

“বেলুন, ওই রেডটা।”

অদম্য জেদ আমার মেয়ের। এই জেদ আর ডেডিকেশন পড়াশোনায় থাকলে কাজে দেবে।

“কত করে বেলুন?”

“দশ। এই নাও বেটা।” এরাও সব রেডি থাকে গছাবে বলে। স্কুলের কাছে রোজ এসে দাঁড়াবেই বেলুনওয়ালা, আইসক্রিম, মেয়েকে আর রোজ রোজ কত বারণ করা যায়! দশটা টাকা খসলোই সেই! বিকেলের মধ্যেই হয়তো ফেটে যাবে বেলুনটা। টাকার শ্রাদ্ধ খালি খালি!

“এই বাবলি চ’ চ’ অটো আসছে!”

উফফ, সেই সাইডে বসতে হবে! বাচ্চা ব্যাগ বেলুন সামলে ধারে বসা যে কি হ্যাপা!

“সেণ্ট্রাল পার্ক?”

“উঠুন।”

“বাচ্চাটাকে একটু ধরবে ভাই?”

“আমায় ওই জিনিসগুলো দিন।”

“আরে ওকে না ধরলে আমি উঠতে পারব না যে!”

কী রে বাবা! সোজা বাংলা বোঝে না কেন এরা? দু’মিনিট মেয়েটাকে ধরবে, তাতে এত কথা কীসের? এত কিছু দু’হাতে সামলে ওঠা যায়?

“বসেছেন?”

“হ্যাঁ হ্যাঁ, চলুন এবার।”

“দিদি, আমায় ব্যাগট্যাগ দিয়ে আপনি মেয়েকে নিয়ে বসুন।”

“আমি একদম ধারে বসে আছি ভাই, বাচ্চাটাকে নিয়ে বসতে ভয় করে এখানে। বড় ছটফটে। খুব অসুবিধা হচ্ছে কি?”

“না, মানে, আচ্ছা, ঠিক আছে।”

ছেলেটাকে দেখে তো খারাপ কিছু মনে হচ্ছে না। এত আমতা আমতা করছে কেন? অবশ্য টুবলুও সেদিন বলছিলো, বাসে-ট্রেনে কোনও বাচ্চাকে কোলে নেওয়ার আগে দু’বার ভাবতে হয় এখন। কে কী ভাববে, কেউ যদি কিছু বলে! সত্যি, কী দিনকাল পড়লো! নোংরামো করে বেড়াবে কয়েকটা শয়তান, আর তার খেসারত দিতে হবে নিরীহ ছেলেগুলোকে। ভাবলেই মাথা গরম হয়ে যায়।

“এই এই আস্তে! বাবলি! মাথা ঠুকলো?”

“না না, আঙ্কেল ধরে নিয়েছে তো!”

“ভাই তুমি ওকে ভালো করে কোলে নিয়ে বসো তো। আমার ভয় করছে। আরেকবার ব্রেক দিলে মাথা ঠুকে যাবে রডে।”

প্রদীপের কথা

ভালো আপদ জুটেছে সকাল সকাল! একে তো ইস্তিরি করা জামাটা চৌপট হয়ে গেল, তারপর বলে আবার ভালো করে কোলে নিয়ে বসতে! এর চেয়ে নিজে নেমে এদের ভেতরে ঢুকতে দিলেই হতো। কোলেফোলে নেওয়ার হ্যাঙ্গামা হতো না। মাইরি অটোটা চালাচ্ছেও যেন মাল খেয়ে! আরেকটু হলেই বাচ্চাটার মাথা ঠুকতো রডে। রিফ্লেক্সে হাত দিয়ে গার্ড করে আটকালাম বলে বাঁচোয়া। মাঠের সব অ্যাকশন ভুলে যাইনি তাহলে এখনও!

“হাসছ কেন আঙ্কেল?”

এইরে! সেই আমার পুরনো রোগ, হাসির কথা ভাবলেই হেসে ফেলা!

“ওই একটা ম্যাচের কথা মনে পড়ে গেল।”

“তুমি খেলো? সেণ্ট্রালের গ্রাউণ্ডে? রোজ বিকেলে?”

“না না, খেলতাম, কলেজে। তোমার নাম কী?”

“শাওনী ঘোষাল। তোমার নাম কী?”

“প্রদীপ।”

“এই যে, হ্যালো, একটু সরতে হবে ওদিকে।”

এপাশের এঁর আবার কী হলো? দিব্যি তো ছিলেন আমার গায়ে যাবতীয় প্যাকেটের ভার চাপিয়ে। শালা কোমরে প্লাস্টিকের প্যাকেটের খোঁচা লেগে ছড়েটড়ে গেছে বোধহয় এতক্ষণে।

“বাচ্চাটাকে নিয়ে... দেখছেন তো!”

“বাচ্চাকে তার মায়ের কাছে দিন। দরদ উথলে উঠছে! আর মায়েরও সেন্স নেই কোনও। দেখে তো মনে হয় শিক্ষিত, চেনা নেই জানা নেই উটকো লোককে বাচ্চা ধরতে দিয়েছে। কিছু হলে তখন কপাল চাপড়াবে। ডিসগাসটিং!”

ভদ্রমহিলা বিড়বিড় করছেন নিজের মনে। মাকেও দেখেছি খুব বেশি রেগে গেলে বিড়বিড় করে। কথাগুলো কানে যেতে কান গরম হয়ে উঠলো। সেই এক কথা, এক ধারণা। এজ্জন্যই শালা লোকের বাচ্চাকে কোলে নিতে নেই, জড়াতে নেই বেশি।

“আরে ভাই গত্তগুলো দেখে চালা! বাচ্চা আছে, ঠুকে যাবে।”

“কোথা দিয়ে চালাবো বলো দাদা? পুরো রাস্তাটার হালত এক! লাইসেন্সের টেস্ট নেয় বোধহয় মালেরা এখানে!”

মেয়েটাকে আরেকটু শক্ত করে ধরে বসি। সত্যি, এই রাস্তাটা আর সারাবে না বোধহয়। এত বছর ধরে একইরকম লঝ্ঝড়ে রয়ে গেল।

কীরকম একটা অস্বস্তি হচ্ছে যেন! কেউ কি তাকিয়ে রয়েছে আমার দিকে?

শাওনীর মা। এখন আর ঠিক আমার দিকে তাকিয়ে নেই, হয়তো একটু আগে ছিলেন, অস্বস্তি হয়েছিল সেকারণেই। এখন ভদ্রমহিলার চোখ আটকে আছে আমার হাতের দিকে। খুব মন দিয়ে দেখছেন উনি আমার হাতদুটোকে, বলা ভালো হাতের ওঠানামা, নড়াচড়া, হাতদুটো সামনে এলো নাকি শাওনীর ছোট্ট শরীরের আড়ালে চলে গেল, সবকিছু পড়ে চলেছেন মন দিয়ে। চোখ মুখ কান জ্বালা করে উঠলো হঠাৎ, অ্যাসিড ঢেলে দিলো কি কেউ?

সুনেত্রার কথা

চমকে উঠলাম ওপাশের মহিলার কথা কানে যেতেই, ঘাড়ের কাছে কেউ যেন পিন ফুটিয়ে দিলো, যন্ত্রণাটা নেমে গেল শিরদাঁড়া বেয়ে। পাশে বসা ছেলেটার মুখের দিকে চোখ চলে গেল। আমাদের টুবলু এর চেয়ে একটু ছোট বোধহয়। এই তো, কত যত্নে বাবলিকে ধরে রেখেছে, অটোওয়ালার সাথে মুখ লাগাচ্ছে ঝাঁকুনি হচ্ছে বলে। না না, ওই মহিলা বড্ড বাজে বকছেন, ওসব কিচ্ছু নয়। তেমন লোকদের দেখলে বোঝা যায়, সিক্সথ সেন্স কাজ করে। বড্ড বেশি ভাবছি আমি।

মায়েদের সত্যি বড় জ্বালা! একবার কাঁটা ঢুকলে উপড়ে ফেলা খুব মুশকিল। বারবার চোখ যাচ্ছে ছেলেটার দিকে। বাবলিকে আমার কাছে নিয়ে নেবো কি? কিন্তু বসাবো কোথায়? এত জিনিস, ওকে ভালো করে ধরতেও পারবো না, রাস্তার যা কণ্ডিশন, একবার ঝাঁকুনি হলে দুজনেই পড়ে যাবো বোধহয়।

অত ভেবে লাভ নেই। ছেলেটার হাতদুটো কোথায়? ওই তো, বাবলিকে বেড় দিয়ে ধরে রেখেছে দু’হাত দিয়ে। হ্যাঁ, দুটো হাতই চোখের সামনে আছে, নিশ্চিন্দি, একটু খেয়াল রাখলেই হবে শুধু, অন্যমনস্ক হলে চলবে না।

“আঙ্কেল, তোমার হাতের এই রেড সুতোটা বিপদ... বিপদ তাড়ানোর সুতো, না?”

“মা বিপত্তারিণীর আশীর্বাদী সুতো। তুমি কী করে জানলে?”

“বাবা, কাকাই পরলো তো ক’দিন আগেই, ঠাম্মি পরালো। আমারও ছিলো, সেদিন ঝোল মাখিয়ে ফেললাম বলে মা খুলে রেখেছে। তোমায় কে পরালো আঙ্কেল সুতোটা?”

“আমায়? আমার মা পরিয়েছে।”

গল্পের পরে

সেণ্ট্রাল পার্ক এসে গিয়েছিল খানিকক্ষণ বাদেই। সুনেত্রা ব্যাগ বোতল বেলুন পার্স সামলে অটো থেকে নেমেছিল সাবধানে, প্রদীপের হাতের দিকে চোখ রেখে। এরপর নেমে এসেছিল শাওনী, নেমেই স্মার্টলি বাড়িয়ে দিয়েছিল ডানহাতটা, প্রদীপের দিকে,

“এসো আঙ্কেল, আস্তে আস্তে নামো।”

শাওনীর নিজের হাতে করে প্রদীপের হাতে মাখিয়ে দেওয়া বিশ্বাসের বর্মে ছিটকে গিয়েছিল সুনেত্রার এতক্ষণের অবিশ্বাসের শেল, খসে গিয়েছিল অটোয় বসে থাকা সেই আরেক মহিলার ছুঁড়ে দেওয়া সন্দেহের তিরও। বিশ্বাসের বর্ম গায়ে চড়িয়ে শাওনীর দিকে তাকিয়ে হাত নেড়ে অফিসের দিকে হাঁটা দিয়েছিল প্রদীপ সরখেল, আরেকটা দিন ভালো করে শুরু করার ইচ্ছে বুকে নিয়ে।

খারাপ আসুক, খারাপ যাক, ভালোটুকু টিকে থাক, শাওনীরা সব বেঁচেবর্তে থাকুক, শ্বাস নিয়ে বাঁচুক প্রদীপ আর সুনেত্রারাও।